শিক্ষায় তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে আইসিটি ব্যবহার করে
ক্লাসকে আগের চেয়ে অনেক বেশী কার্যকর ও প্রানবন্ত করা যায়।
শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক
শিখন-শেখানো কার্যক্রম:
শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন-শেখানো কার্যক্রম বিদ্যালয়ের
শ্রেণীকক্ষে দীর্ঘদিনের একটি আলোচ্য ও
গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে প্রচলিত বিএড কোর্স, ডিপিএড কোর্স এবং প্রকল্পভিত্তিক বিভিন্ন স্বল্পকালীন
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন শেখানো কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা
দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনা করা হয়। প্রশিক্ষণ
চলাকালীন সিমুলেশন ক্লাশ বা মাইক্রো টিচিং এর মাধ্যমে এ সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট
করার জন্য বিভিন্নি উপকরণ ব্যবহারের উপরে প্রশিক্ষণে গুরুত্বারোপ করা হয়। এমনকি
কিভাবে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে উপকরণ তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে ধারণা দেয়া হয়।
কিন্তু বাস্তবে শ্রেণি পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, শিক্ষকগণ
প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতি ব্যবহার করেই শ্রেণি পাঠদান পরিচালনা করছেন যা
শিক্ষার্থীদের মুখস্থ বিদ্যার দিকে পরিচালিত করছে। শিক্ষকগণ শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক,
চক, ডাস্টার, বোর্ড
ব্যবহার করেই শিক্ষক-কেন্দ্রিক শ্রেণী পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন। এর কারণ হিসেবে যে
বিষয়গুলো পাওয়া যায় তা হলো, শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক
শ্রেণীকার্যক্রম সম্পর্কে শিক্ষকদের অনীহা, অনাগ্রহ বা
শিক্ষকদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অস্পষ্ট ধারণা বা শিক্ষা উপকরণ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর
অভাব বা উপকরণ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যয়ভার কর্তৃপক্ষের বহন না করা বা শিক্ষকদের
পেশাগত দক্ষতার অভাব বা প্রতিকূল পরিবেশ ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন শেখানো কার্যক্রম শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক শিখনের মাধ্যমে সহজেই করা সম্ভব।
শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীরা শিখন শেখানো সকল কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে এবং
সম্পৃক্ত থাকবে। শিক্ষক পাঠ পরিচালনায় সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি
করবেন এবং লক্ষ্য রাখবেন যেন সকল শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট পাঠে পুরাপুরি অংশগ্রহণের
মাধ্যমে শিখতে পারবে। এজন্য শিক্ষক শ্রেণী কার্যক্রমে শুরুতে এমন কিছু উপকরণ
প্রদর্শন করবেন যা শিক্ষার্থীদের জীবন ঘনিষ্ঠ এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে
সম্পর্কিত বাস্তব বা মূর্তমান হয়। শিক্ষার্থীরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে। যে
বিষয়বস্ত্ত শ্রেণীতে উপস্থাপন করা হবে সেটির সংঙ্গা, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা-অসুবিধা,
পার্থক্য ইত্যাদি শিক্ষার্থীরা খোঁজে বের করবে এবং তা বাস্থবায়ন
করার জন্য শিক্ষক সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করবেন। শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক
পাঠদানের জন্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে গল্প বলা, পর্যবেক্ষণ,
অনুসন্ধান, প্রদর্শন, উপস্থাপন, অভিনয়, বিতর্ক
ইত্যাদি পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের দ্বারা একক কাজ, জোড়ায়
কাজ, নোট নেওয়া,
লিখতে দেওয়া, সাক্ষাৎকার, আঁকতে দেওয়া ইত্যাদি কৌশল প্রয়োগ করা যায়। শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষায় তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রেণী কার্যক্রমে ডিজিটাল কনটেন্ট প্রদর্শন
করে সহজেই শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
শ্রেণীকক্ষে শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত পদ্ধতি ও
কৌশল ব্যবহার একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়। উপযুক্ত পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহারের মাধ্যমে
শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শ্রেণী কার্যক্রম
পরিচালনা করা সম্ভব নয়। পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে যে, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শ্রেণীকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।
মাল্টিমিডিয়া
ক্লাসরুম:
অনেকে মনে করে থাকেন, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির
(আইসিটি) ব্যবহার একটি ব্যয়বহুল পদ্ধতি এবং এটি একটি কল্পনাবিলাস মাত্র। কারণ তারা
মনে করেন, এ পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব
দরকার। এজন্য দরকার হবে প্রচুর অর্থ, দক্ষ জনবল, শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের আর্থিক
সামর্থ ইত্যাদি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিক্ষায় আইসিটি ব্যবহারের জন্য একটি ক্লাসরুমে
একটি ল্যাপটপ/ডেস্কটপ, একটি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং একটি পর্দা বা সাদা রং করা
দেওয়াল থাকলেই যথেষ্ট। বর্তমান বাজার দর মোতাবেক এই কাজটুকু করতে ১ লাখ টাকার মতো
প্রয়োজন। দেশের প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েই এর জন্য আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। যদি কোন
বিদ্যালয়ে আর্থিক সামর্থ্য নাও থাকে তবে এলাকার অবস্থাসম্পন্ন বিদ্যোৎসাহী
ব্যক্তিদের নিকট থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করা যায়। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে,
সরকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১টি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম স্থাপন করার পরিকল্পনা
ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছেন। তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন হবে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের
প্রশিক্ষণ। টিকিউআই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি বিদ্যালয়ের (যেখানে মাল্টিমিডিয়া
ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করা হয়) ৩ জন করে শিক্ষককে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া
হবে। অচিরেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম প্রতিষ্ঠা এবং
শ্রেণীশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাস
পরিচালনায় শিক্ষকদের দক্ষতা:
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের কম্পিউটারে
খুব বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হবে না, বরং কয়েকটি বিষয়ের উপর মোটামুটি দক্ষতা অর্জন করলেই তা করা সম্ভব।
যেমন: কম্পিউটার অফ ও অন, বিভিন্ন আইকন সম্পর্কে পরিচিতি,
ফাইল ও ফোল্ডার খোলা, এমএস পাওয়ারপয়েন্ট
এবং ইন্টারনেট ব্রাউজিং। কম্পিউটার অফ ও অন কয়েকবার অনুশীলন করলেই পারা যায়। এমএস
পাওয়ার পয়েন্ট সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেতে কয়েকটি সেশনের প্রয়োজন হবে। তবে একটি
পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করলে, তা বারবার করতে
ইচ্ছে করবে। কারণ শিক্ষকদের মেধা ও মননশীলতা প্রয়োগের জন্য এটা একটি শ্রেষ্ঠ উপায়।
ইন্টারনেট ব্রাউজিং সম্পর্কে ২/১টি সেশনের মাধ্যমেই দক্ষতা অর্জন করা যায়। একটি
কথা না বললেই নয় তাহলো, ইন্টারনেট হচ্ছে তথ্যের একটি
মহাসমুদ্র। যেখানে লাখ লাখ ছবি, ভিডিও, অ্যানিমেশন, টেক্সট
ইত্যাদি রয়েছে। সেখান থেকে সহজেই প্রয়োজন্মত উপকরণ বেছে নিয়ে তা শ্রেণীকক্ষে
ব্যবহার করা যায়। ইন্টারনেটে যে কোন একটি বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ছবি,
অ্যানিমেশন বা ভিডিও অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রেও রয়েছে বিভিন্ন
কৌশল, যা খুব সহজেই আয়ত্ত করা সম্ভব। এই বিষয়গুলো
সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে এই শিক্ষক নির্দেশিকা থেকে।
শ্রেণীকক্ষে ব্যবহার
উপযোগী পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য ছবি, ম্যাপ ও উপাত্ত নির্বাচন:
শিখনফলের ভিত্তিতে বিষয়বস্ত্তর যেটুকু শ্রেণীকক্ষে
আলোচনা করতে চান, তা নির্ধারণ করার পর একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন। উক্ত
পরিকল্পনায় বিষয়বস্ত্তর কোন অংশের জন্য কী কী ছবি, গ্রাফ, উপাত্ত প্রদর্শন করতে
চান তা পূর্বেই অনুমান করে নিন। এবার ইন্টারনেটে ‘গুগল’ ওয়েব ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ
করুন। কাঙ্খিত একাধিক ছবি ডাউনলোড করে নিন। এবার পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য
স্লাইডে ছবি সংযুক্ত করুন। ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, ছবিটি
যেন-
১. অবশ্যই বিষয় সংশ্লিষ্ট হয়, শিক্ষাক্রমের বিশেষ উদ্দেশ্য এবং শিখনফলের সাথে
সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
২. শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু করার মতো হয়।
৩. শিক্ষার্থীদের জীবন ঘনিষ্ঠ বা পরিচিত পরিবেশ প্রদর্শন করে।
৪. আমাদের দেশীয় ছবি হয়। তবে একান্তই দেশীয় ছবি না পাওয়া গেলে বিদেশী ছবি নেয়া
যেতে পারে।
৫. আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ, রীতিনীতি, ধর্মীয় চেতনার পরিপন্থী না হয়।
৬. রাষ্ট্রীয় আদর্শ, মূলনীতি এবং বিভিন্ন নীতির পরিপন্থী না হয়।
৭. অবশ্যই যেন শিক্ষার্থীদের বয়স উপযোগী হয়।
পাওয়ারপয়েন্ট
প্রেজেন্টেশন শ্রেণীকক্ষে ব্যবহার:
শ্রেণীকক্ষে
পরীক্ষামূলকভাবে যাচাই করে দেখা গেছে যে, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ব্যবহার করে ক্লাশ
করার ফলে শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন হয়ে যায়, বিশেষ করে বিষয়বস্ত্তর
প্রতি প্রায় সকল শিক্ষার্থীর সহজেই মনোযোগ আকর্ষণ করা যায়। তাছাড়া শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক
শ্রেণী কার্যক্রম সহজতর হয়ে যায়। সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। এক্ষেত্রে
শিক্ষকদের বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে বক্তৃতা দেয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। শ্রেণীকক্ষে
শিক্ষকদের সহায়তাকারীর ভূমিকা থাকতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা কোথাও থেমে গেলে ক্লু দিয়ে
তাদেরকে সহায়তা করতে হবে। তা করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে বিভিন্ন স্লাইডের উপস্থাপন
এবং ব্যবহার।
প্রথম
স্লাইডের অ্যানিমেশন/ছবি/চিত্র/ভিডিও ক্লিপটি হবে অত্যন্ত আকর্ষণীয় যা ছাত্রছাত্রীদের
বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে আলোচনার মানসিক প্রস্ত্ততি নিতে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে বিষয়বস্ত্ত
সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পূর্ব অভিজ্ঞতাও যাচাই করা সম্ভব। এ কারণে স্লাইডের অ্যানিমেশন/ছবি/চিত্র/ভিডিও
ক্লিপটি ছাত্রছাত্রীদের thought provoking হতে হবে। কী বোঝা যাচ্ছে, কী দেখা যাচ্ছে
ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে শ্রেণিকার্যক্রম শুরু করতে হবে। শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে
এ বিষয়গুলো খাতায় নোট নিবে অথবা শিক্ষার্থীদের দিয়ে উদঘাটিত বিভিন্ন দিকগুলো বোর্ডে
লিখিয়ে নিতে হবে।
পরবর্তি
স্লাইডগুলো ধারাবাহিকভাবে দেখানো হবে। প্রত্যেকটি স্লাইড দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে
বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিতে হবে। তাহলে শ্রেণী কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা যাবে। একেকটি স্লাইড প্রদর্শনের পর একক কাজ, জোড়ায় কাজ এবং দলীয় কাজ করানো যায়।
শিক্ষার্থীদের দিয়ে এগুলো উপস্থাপনের মাধ্যমে শিখন স্থায়ী করা যায়।
একটি
বিষয়বস্ত্তর উপাদান বা বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করার ক্ষেত্রে এক বা একাধিক স্লাইড দেখানোর
পর শিক্ষার্থীরা কী কী দেখতে পাচ্ছে সেগুলো চিহ্নিত করা যায়। চিহ্নিত দিকসমূহ শিক্ষার্থীদের
দিয়ে চকবোর্ডে বা ওয়াইট বোর্ডে লিখিয়ে রাখা
যায়। সকল উপাদান বা বৈশিষ্ট্য উদঘাটন করা না পর্যন্ত শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের সহায়তা
করে যাবেন। সবশেষে একটি স্লাইডে উপাদান বা বেশিষ্ট্যগুলো দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের দ্বারা
উদ্ঘাটিত উপাদান বা বৈশিষ্ট্যগুলো যাচাই করিয়ে নেওয়া যায়।
একটি কথা অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, শিক্ষক কোন অবস্থায় কোন
বিষয়বস্ত্তর সংঙ্গা বর্ণনা করবেন না বা ছাত্রছাত্রীদের মুখস্থ করতে উৎসাহিত করবেন
না। বরং স্লাইড শো করে ছাত্রছাত্রীরা কী বোঝতে পারছে বা কী দেখতে পাচ্ছে এরকম
বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে বিষয়বস্ত্তর সংঙ্গা বের করে আনা
যায়। তাহলে ছাত্রছাত্রীরা সংঙ্গাটি মুখস্থ না করে অবশ্যই বোঝতে চেষ্টা করবে।
বর্তমানে প্রবর্তিত সৃজনশীল প্রশ্নকাঠামো উত্তরের জন্য ছাত্রছাত্রীদের
সৃজনশীলতার উন্মেষ ঘটানোর লক্ষ্যে পাওয়ারপয়েন্ট কন্টেন্ট একটি খুবই কার্যকর
পদ্ধতি। কারণ বিভিন্ন স্লাইড দেখানোর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োগ ও উচ্চতর
দক্ষতার প্রশ্নগুলোর উত্তর শ্রেণীকক্ষে বের করে আনা যায়। প্রথমে দলগত ও পবরর্তীতে
এককভাবে শ্রেণিকার্যক্রম বিভিন্ন স্লাইড শোর মাধ্যমে করানো হলে শিক্ষার্থীরা
সৃজনশীল মানসিকতার প্রতি আস্থাশীল হবে।
শ্রেণিকক্ষে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের
মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানমূলক দক্ষতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ দক্ষতার, চিন্তন
দক্ষতাসহ সহযোগিতামূলক শিখন দক্ষতার উন্মেষ ঘটানো সম্ভব। একটি স্লাইড প্রদর্শন করে
জোড়ায় বা দলীগত কাজ করিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে সহযোগিতমূলক মনোভাবের বিকাশ ঘটানো
যায়। নিজের বক্তব্য তুলে ধরা, অন্যের যুক্তি ভাল হলে তা গ্রহণ করা, অন্যের বক্তব্য
শোনা, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি
করা সম্ভব। এক বা একাধিক স্লাইড দেখানোর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান প্রক্রিয়া অনুসরণ
করে একটি মতে পৌছানো যায়।
0 Comments